
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় ৮,০০০ উত্তর কোরিয়ার সৈন্য মোতায়েন করেছে এবং শিগগিরই তাদের সংঘাতে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তর কোরিয়া প্রায় ১০,০০০ সৈন্য পাঠিয়েছে, যাদেরকে প্রথমে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী কুর্স্ক অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে।
ব্লিঙ্কেন বলেন, এই উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে আর্টিলারি, ড্রোন, এবং মূল পদাতিক কৌশলগুলোতে, যার মধ্যে ট্রেঞ্চ ক্লিয়ারিংও রয়েছে। এর মাধ্যমে স্পষ্ট যে, রাশিয়া এসব সৈন্যকে ফ্রন্টলাইনে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে। এটি রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে বিদেশি সৈন্যের প্রথম বড় ধরনের ব্যবহার হতে যাচ্ছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া এই সৈন্যদের মাধ্যমে ইউরোপের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে বড় ভূমি যুদ্ধে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এছাড়া, কোরিয়ান উপদ্বীপে উত্তেজনা বাড়ার সম্ভাবনাও দেখা দিচ্ছে, যেখানে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন শীতল হচ্ছে।
ব্লিঙ্কেনের মতে, এই পদক্ষেপে রাশিয়ার দুর্বলতা স্পষ্ট। তিনি বলেন, পুতিন তার নিজ দেশের সৈন্যদেরকে একপ্রকার যুদ্ধে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। এখন তিনি উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের দিকে ফিরেছেন, যা তার অসহায়ত্বের পরিচয়।
চীনকেও এই ইস্যুতে প্রভাব বিস্তারে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান ব্লিঙ্কেন। মার্কিন এবং চীনা কূটনীতিকরা সম্প্রতি এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে চীন তাদের প্রভাব ব্যবহার করে এই কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করবে। যদিও চীন রাশিয়ার সাথে সীমাহীন অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার এই সামরিক সহযোগিতা পছন্দ করছে না কারণ এটি পূর্ব এশিয়ায় অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে।
এদিকে, ব্লিঙ্কেনের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে উত্তর কোরিয়া একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। এটির ফ্লাইট সময় ছিল ৮৬ মিনিট, যা উত্তর কোরিয়ার জন্য নতুন একটি রেকর্ড। বিশ্লেষকদের ধারণা, এর মাধ্যমে দেশটি বৃহত্তর বহনক্ষমতা সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা করছে, যা ভবিষ্যতে পশ্চিমের দেশগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে।
হোয়াইট হাউস, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এবং পেন্টাগন রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়াকে সতর্ক করে বলেছে , উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করলে তারা ‘বৈধ সামরিক লক্ষ্য’ হয়ে উঠবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল