
বেসরকারি শিক্ষকরা ৩ হাজার ১২৫ টাকা উৎসব ভাতা পান। এই অর্থ দিয়ে তারা কার জন্য কেনাকাটা করবেন? শতভাগ উৎসব ভাতার দাবি আপনি সমর্থন করেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষকরা উৎসব ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে আন্দোলন করেছেন। তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার ভাতা বৃদ্ধির কথা বলেছে। এখন কতটাকা বাড়াবে সেটি সরকার ভালো বলতে পারবে। তবে শিক্ষকদের ভাতা বাড়ানো উচিত।’
জানা গেছে, বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা হিসেবে পেয়ে থাকেন। একজন সহকারী শিক্ষক বেতন পান ১২ হাজার ৭৫০ টাকা। সে হিসেবে তার উৎসব ভাতা ৩ হাজার ১২৫ টাকা।
শিক্ষকরা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক মর্যাদার বৈষম্য অনেক বেশি। সামনে তরুণ প্রজন্ম শিক্ষক হওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা যখন, তখন দূর দূরান্তে শিক্ষক জিন্দা লাশ হয়ে পরেছে। ৩ হাজার ১২৫ টাকা দিয়ে কীভাবে ঈদ পার করবো তা জানি না। নিজের জন্য কিছু কেনা হবে না। শিক্ষকদের এমন করুণ অবস্থায় রেখে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
কুষ্টিয়ার একটি স্কুলের গণিত বিষয়ের শিক্ষক মো. আসাদ বলেন, ‘ছোট বেলায় জানতাম ঈদ মানে খুশি আর ঈদ মানে আনন্দ। শিক্ষকতা পেশায় প্রবেশের পর ঈদের ২/৩ মাস আগে থেকেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পরে যায়। ঈদ আমাদের জন্য একটা অভিশাপ। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে বাবা-মা, ভাই-বোন, বউ-মেয়েকে কিছু না দিয়ে কীভাবে ঈদের দিন ঈদের নামাজে যেতে পারি? তারা ভাবে আমি একটা চাকরি করি। আমাদের জন্য ঈদ মানেই লজ্জা, অপমান, দুঃখ ভারাক্রান্ত দিন। ঈদ শিক্ষক সমাজের জন্য অভিশাপ বয়ে আনে ।’
শারমিন নিপা নামে আরেক শিক্ষক বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষকদের যেই টাকা ঈদ বোনাস হিসেবে দেওয়া হয়, তার চেয়ে গ্রামীণ এলাকার বাৎসরিক কাজের লোকও ঈদের সময় অনেক বেশি টাকা বোনাস হিসেবে পায়। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যদের ঈদের জামা-কাপড়ও পায়। ৩ হাজার ১২৫ টাকা ঈদ বোনাসের নামে শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন করার মতো।’
সূত্র শিক্ষা বার্তা