নিজস্ব প্রতিনিধি, রাজশাহী :
”আদিবাসী ঐক্য মঞ্চ” গঠন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন (৬ ফেব্রুয়ারী,২০২৫,) রোজ বৃহস্পতিবার, সকাল ১১ ঘটিকা, হোটেল সেফ গার্ডেন, নিউমার্কেট রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হয় ।
আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি এবং ভাষা, সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও আত্মবিকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবীতে উত্তরবঙ্গের আদিবাসী সংগঠনসমুহের ঐক্যের ভিত্তিতে '' আদিবাসী ঐক্য মঞ্চ'" গঠন করা হয় ।
আদিবাসী সংগঠনের নেতারা বলেন,
আমরা বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠী ঐতিহাসিকভাবে নিষ্পেষিত ও নিপীড়িত হয়ে আসছি। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে আদিবাসীরা তিলকা মাঝি, বিরশা মুন্ডা, সিধু-কানু'র নেতৃত্বে আন্দোলন ও সংগ্রামে বীরত্ব প্রদর্শন করেছে। '৪৭ এ দেশ বিভক্তির পর পাকিস্তান "রাষ্ট্রে তৎকালীন পূর্ব বাংলার প্রতি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য ও নিপীড়ন পূর্ব বাংলার জনগণকে স্বাধিকার-স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতার প্রশ্নে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। মুক্তির আশায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসী জনগণ, বাঙালি ও আপামর জনসাধারণের সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ ও ত্যাগ স্বীকার করে। উত্তরবঙ্গের আদিবাসীদের মধ্যে সাগরাম মাঝি, বিশ্বনাথ টুডু, চাম্পাই সরেন, সোম সরেন এর মতো শত শত লড়াকু মুক্তিযোদ্ধারা বীরদর্পে লড়াই করেছেন। কিন্তু স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে যে সংবিধান প্রণীত হলো সেখানে কেবল বাঙালি জাতির রাষ্ট্রের কথাই বলা হলো, বাঙালি ব্যতীত অন্যান্য জাতি-সত্ত্বা তথা আদিবাসীদের অস্বীকার করা হয়। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে বিবিসির রিপোর্ট অনুসারে "উত্তরবঙ্গের আদিবাসীরা ৩ লক্ষ একর এর অধিক জমি হারিয়েছে, আলফ্রেড সরেন, অবিদিও মার্ডীর মতো অনেক আদিবাসী নেতাদের প্রাণ দিতে হয়েছে"। বিগত আওয়ামী সরকারের সময় ২০১৫ সালে পার্বতীপুর উপজেলার চিড়াকুটা নামে আদিবাসী সাঁওতাল গ্রামে জমি নিয়ে বিবাদের জেরে সাম্প্রদায়িক হামলা ঘটিয়ে প্রায় ৫৫টি ঘরবাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালিয়ে পুরো গ্রাম ভঙ্গ করে দেয়া হয়, যেখানে অনেকে গুরুতর আহত হন। ২০১৬ সালে রাজনৈতিক মদদে গোবিন্দগঞ্জের বাগদা ফার্মে ১ হাজার ৮৪২ একর জমি কব্জা করা হয়েছে, যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশ ও দলীয় গুন্ডাবাহিনী একযোগে আদিবাসী ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ও হামলা চালায় উক্ত ঘটনায় শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মার্ডি ও রমেশ টুডু ৩ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় আরও অনেকে গুরুতর আহত হন। আদিবাসীদের উপর এহেন হামলা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু বরাবরই আদিবাসীদের পক্ষে কোন বিচার হয়নি। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এরকম আরও অনেক ঘটনার নজির আছে যা আদিবাসীদের উপর চলমান ধারাবাহিক বৈষম্য, জুলুম ও নিপীড়নের চিত্রকে প্রস্ফুটিত করে।
গত ৫ই আগস্ট ২০২৪ ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের চাপে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটেছে। এই আন্দোলনে আদিবাসীরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণ আকাঙ্খার বাংলাদেশ গড়ার মিছিলে শামিল ছিলো। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন অর্ন্তভুক্তিমূলক বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় ছিলো ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মূল আকাঙ্খা। এই নতুনকে বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগকে সঙ্গত কারণেই স্বাগত জানায় আদিবাসীরা। কিন্তু স্বল্প সময় অতিক্রান্ত হতে না হতেই দেখা যায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, নির্যাতন ও লুটপাট এর মতো ঘটনা ঘটছে, যা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের আত্মত্যাগের চেতনাকে ভূলুন্ঠিত করে । রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আদিবাসী সাঁওতাল ও উরাঁও সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। একইসাথে চাপাই নবাবগঞ্জ এর সদর উপজেলার টংপাড়া গ্রামে পুকুর থেকে মাছ চুরি ও আদিবাসী রাজোয়াড় সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও উচ্ছেদের অভিযোগ পাওয়া যায় । নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর, পত্নীতলা, মহাদেবপুর, ধামুইরহাট উপজেলায় আদিবাসী সাওতাল ও উরাও সম্প্রদায়ের বাড়িঘর-দোকানপাট লুট, পুকুর থেকে মাছ লুট, আক্রমণ ও শারিরীক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এছাড়া দিনাজপুর উপজেলার বীরগঞ্জ, কাহারোল, বোচাগঞ্জ, পার্বতীপুর এবং ঠাকুরগাও জেলার রানীশৈংকল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আদিবাসীদের উপর হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নিজ ভিটা থেকে উচ্ছেদের পাশবিক তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। সম্প্রতি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এর রাজাবিরাট গ্রামে এক আদিবাসী সাওতাল নারীকে মারধর ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এই সকল ঘটনাকে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক বলেই দায় এড়িয়ে গেছেন। প্রসঙ্গত, আদিবাসীদের প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে অংশগ্রহণ তেমন নেই বললেই চলে। আর রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদল কিংবা দেশে কোন অস্থিতিশীলতা দেখা দিলে এই আদিবাসী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও লুটপাট যেন একটা রাজনৈতিক ট্রেন্ডে পরিনত হয়েছে।
নিরীহ আদিবাসী জনগোষ্ঠী সংখ্যালঘু বিধায় পেশী শক্তিতে যেমন দূর্বল, তেমনি রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও সহযোগীতায় প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অবহেলিত।
বিগত ১৪ই জানুয়ারী, ২০২৫ পাঠ্যবইয়ে 'আদিবাসী' নাম সংবলিত গণ-অভ্যুত্থানের সম্প্রীতির গ্রাফিতি 'স্টুডেন্ট কর সভারেন্টি'র বিরোধিতায় বাতিল করা হয" । এর প্রতিবাদ ও উক্ত গ্রাফিতি অর্ন্তভুক্ত করার দাবীতে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামলে তাদের উপর 'স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি'র সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হামলা চালিয়ে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের গুরুতর আহত করে। পরদিন ১৬ই জানুয়ারী ২০২৫ এর প্রতিবাদে আদিবাসীদের সাথে সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ মিছিল করলে, সেই মিছিলে পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা বর্বরোচিত হামলা চালায়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশ করার স্বাধীনতা একটি মৌলিক গনতান্ত্রিক অধিকার, কিন্তু অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতায় আসীন অবস্থায় পুলিশের এই মারমুখী আচরণ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলের সমতুল্য। এই ঘটনায় পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা যায়। কিন্তু স্টুডেন্ট ফরসভারেন্টি' কিংবা 'পাঠ্য পুস্তকে আদিবাসী গ্রাফিটি' নিয়ে সরকারের অবস্থান বা কোন বক্তব্য এতোদিনেও আমরা পায় নি।
সুতরাং আমরা "আদিবাসী ঐক্য মঞ্চ” মনে করি যে আদিবাসীদের প্রতি এহেন আচরণের পেছনে নিশ্চয় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বিদ্যমান।
আমরা যখনই আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে কথা বলেছি, যখনই আন্দোলনে নামার চেষ্টা করেছি; তখনই ক্ষমতাসীন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলআন্দোলনে হামলা চালিয়ে নস্যাৎ করেছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময় স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি' নামে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের পরিচয় আমাদের বোধগম্য নয়। তারা কি এই সরকারের মদদপুষ্ট নাকি কোন সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অংশ? এ ব্যাপারে আমরা এই অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের ব্যাখ্যা দাবি করছি।
গত এক দশকের অধিক সময়ে যখনই আদিবাসীদের পক্ষ থেকে 'আদিবাসী' বিষয়ে কোন দাবিনামা এসেছে, তখনই আদিবাসীদের অস্বীকার করা হয়েছে। অথচ বিভিন্ন সরকারি নথির দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলের এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রচলিত আইন ও সরকারি দলিলে 'আদিবাসী' শব্দটির ব্যবহার রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধি ১৯০০, পূর্ববঙ্গ জমিদারি দখল ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ৯৭ ধারা, আয়কর আইনসহ সরকারি বিভিন্ন পরিপত্র, দলিল ও হাইকোর্টের রায়েও 'আদিবাসী' শব্দটির উল্লেখ রয়েছে। উল্লেখ্য যে,বর্তমানেও আদিবাসীদের সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আবেদনে 'আদিবাসী' শব্দ ব্যবহার অব্যাহত থাকার প্রমাণ রয়েছে। এমনকি সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীবর্গ জাতিসংঘের আদিবাসী দশক কিংবা দিবসে 'আদিবাসী' নিয়ে বাণীও প্রদান করেছেন। এরপর হঠাৎ বলা হয়, এদেশে কোন আদিবাসী নাই যারা আছে, এরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, উপজাতি বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়।
বিষয়টি এমন যে, এই জনগোষ্ঠী আগে আদিবাসী ছিলো, এখন নেই?
আদিবাসী সম্প্রদায় নিয়ে কোন আলোচনা ও দাবি উঠলেই ইদানীং আদিবাসী সংজ্ঞায়ন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। একাংশের দাবি বাঙালিরা এই বাংলাদেশ ভূখন্ডের আদি বাসিন্দা, সুতরাং বাঙালিরাই আদিবাসী। কিন্তু আদিবাসী সংজ্ঞায়নের সর্বজনীন মত হলো- সাধারণত, কোনো ভূখন্ডে বহিরাগতদের আগমনের আগে যারা বসবাস করত এবং এখনও করে, যাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, রীতিনীতি, ও মূল্যবোধ রয়েছে, যারা নিজেদের একটি স্বতন্ত্র সমাজ-সংস্কৃতির অংশ হিসেবে চিহ্নিত করে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা সমাজে সংখ্যালঘু হিসেবে বিবেচিত, তারাই আদিবাসী।
এই বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলাদেশে বসবাসরত সাঁওতাল, মাহালী, উরাঁও, মাল পাহাড়িয়া, মুন্ডা, গারো, মণিপুরি, হালং,পাত্র, জৈনা, খাসিয়া, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, বম, খেয়াং, খুমি, লুসাই, পাংখোয়া প্রভৃতি জাতিগোষ্ঠী আদিবাসী হওয়ার নাবি রাখে। কিন্তু রাষ্ট্র একটি ভুল তাত্ত্বিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আদিবাসী এবং আদি বাসিন্দার মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যর্থ হয়েছে। আদিবাসী শব্দটির অর্থ একটি সাংস্কৃতিক ক্যাটাগরি, আর আদি বাসিন্দা একটি জনতাত্ত্বিক ক্যাটাগরি। এই বিভ্রান্তির কারণে রাষ্ট্র আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি অস্বীকার করে আসছে।
আমরা স্পষ্টত বলতে চাই, আদিবাসীদের উপর বৈষম্য, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও উচ্ছেদের যত ঘটনা ঘটছে, তার অন্যতম প্রধান কারণ আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি রাষ্ট্রের অবহেলামূলক দৃষ্টিভঙ্গি। ফলত রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বাঙালি ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন জাতিসত্ত্বার সাথে সাংস্কৃতিক সৌহার্দ্যের পরিবর্তে রাজনৈতিক স্বার্থবাদিতার কারনে বৈরিতা ও সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তি লালনে উৎসাহিত করছে যা মোটেই কাম্য নয় ।
আপনারা জানেন যে, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার সংবিধান সংস্কার কমিশন করছে, যার রিপোর্ট ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এই সংবিধান কমিশনে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কাউকে প্রতিনিধি রাখা হয়নি।
সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে - "সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গনতন্ত্র” এ বিষয়সমূহকে প্রস্তাব করা হয়েছে।
বহুত্ববাদের ব্যাখায় ৫.২ ধারায় বলা হয়েছে, "বাংলাদেশ একটি বহুত্ববাদী, বহু-জাতি, বহু-ধর্মী বহু-ভাষী ও বহু-সংস্কৃতির দেশ যেখানে সহাবস্থান ও যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে।" কিন্তু দু:খের বিষয় বাঙালি ব্যতীত অন্যান্য জাতি-গোষ্ঠী তথা আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশন একটি দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভার প্রস্তাব করেছে। কমিশন নিম্নকক্ষে ৩০০ আসনের সাথে ১০০ নারী সংরক্ষিত আসনের প্রস্তাব করেছে, কিন্তু আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত কোন আসনের কথা বলেনি। অপরদিকে, উচ্চকক্ষ ১০৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত যার মধ্যে ১০০ জন রাজনৈতিক দলসমূহ থেকে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ (চজ) থেকে আসবে, অপর ৫ জন সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত হবেন। সুতরাং উচ্চকক্ষেও আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্বের বিষয়টিও কার্যত নেই।
আমরা সম্মিলিত আদিবাসী মঞ্চ মনে করি বাংলাদেশ কেবল একক জাতিসত্ত্বার দেশ নয় বরং বহু জাতি ও সংস্কৃতির দেশ। যতদিন পর্যন্ত আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা না হয়, যতদিন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও আত্মবিকাশের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ সাংবিধানিকভাবে গৃহীত না হয়; ততদিন আদিবাসীদের এই সংকট কাটবে না।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় এবং বৈষম্যহীনতার আদর্শে গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে হলে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা আবশ্যক। তাই আমরা আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে রাজপথে আন্দোলনে থাকার ঘোষণা।
আদিবাসী ঐক্য মঞ্চ
(শরীক সংগঠনসমূহ: উত্তরবঙ্গের আদিবাসী সুশীল সমাজ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, উত্তরবঙ্গ আদিবাসী
ফোরাম, আদিবাসী মুক্তি মোর্চা, বাংলাদেশ মুন্ডা এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ উরাও কালচারাল ফোরাম, বাংলাদেশ আদিবাসী সংঘ, বাংলাদেশ
মুন্ডা স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, পাহাড়িয়া পরিষদ, পাহাড়িয়া ছাত্র পরিষদ, পাহাড়িয়া বাইশি পরিষদ, মাহালে ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড ডেভেলপমেন্ট
কমিটি, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ, আসারু, সান্তাল ছাত্র ঐক্য, মাহলে স্টুডেন্ট কাউন্সিল।
বাংলাদেশ ওরাও ছাত্রসংগঠন (বসা) ।